টাঙ্গাইল সদর উপজেলার কাতুলী ইউনিয়নের রশিদপুর এলাকায় প্রভাবশালী চক্র কর্তৃক কৃষিজমি থেকে অবৈধভাবে মাটি কেটে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে। এতে কৃষি জমির উর্বরতা নষ্ট, পরিবেশ দূষন এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের স্বাস্থ্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
জানা যায়, রশিদপুর গ্রামের স্থানীয় যুবলীগের সভাপতি মোহাম্মদ জলিল খান, একই গ্রামের স্থানীয় যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ বাবু খানসহ তার সহকারী হযরত আলী নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে জোরপূর্বক এক্সাভেটর (ভেকু) লাগিয়ে মাটি কেটে অন্যত্র বিক্রি করছেন। কয়েক বছর ধরে তারা এই কাজ করে যাচ্ছেন। অন্তত ২০টি ট্রাক মাটি অন্যত্র ফেলার কাজে নিয়োজিত থাকপ। প্রতিটি ট্রাক দিনে অন্তত ১০ বার মাটি ভরে নিয়ে যায়। এতে রাস্তায় প্রচন্ড ধুলোর সৃষ্টি করছে যার কারণে এলাকাবাসী রয়েছে স্বাস্থ্যঝুকিতে।
সরেজমিনে উপস্থিত হয়ে দেখা যায়, রশিদপুর গ্রামে অন্তত ৮ একর ফসলি জমি থেকে এক্সকাভেটর (ভেকু) দিয়ে মাটি কাটা হচ্ছে। এতে জমির বিভিন্ন স্থানে ৬ থেকে ৭ ফুট গভীর গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
এলাকাবাসী অভিযোগ করে জানান, ফসলি জমির মাটি কাটার বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করলেও অজ্ঞাত কারণে নীরব থাকে প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিরা। প্রশাসনের রহস্যময় নীরবতার সুযোগে মাটি ব্যবসায়ীদের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না ফসলি উর্বর জমি, উঁচু ভিটা এবং জলাশয়। তিন ফসলি কৃষিজমি পরিণত হচ্ছে ডোবায়। দিন দিন ফসলের উৎপাদন কমছে। বেকার হয়ে পড়ছে কৃষক এবং পরিবেশেও এর বাজে প্রভাব পরছে। ফলে একদিকে যেমন এলাকার উর্বর আবাদি জমির পরিমাণ কমছে অন্যদিকে হুমকির মুখে পড়ছে কৃষি উৎপাাদন। মাটি পরিবহনে ভারী ট্রাক ও পিকআপ চলাচলে ইউনিয়ন ও গ্রামীণ সড়ক হচ্ছে ক্ষতিগ্রস্ত। স্থানীয়দের দাবি, উপজেলা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে ও সরকারি আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে আবাদি জমির মাটি জোরপূর্বক কাটার মহোৎসবে মেতেছে মাটিখেকো প্রভাবশালী সিন্ডিকেট।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, কৃষি জমি থেকে মাটি কেটে নেওয়ায় জমির ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। প্রতিবাদ করায় পতিত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ, যুবলীগের নেতারা বলেছেন, যা করা হচ্ছে টাঙ্গাইলের ছাত্র সমন্বয়কদের পরামর্শক্রমেই করা হচ্ছে। মাটি কাটা শেষ হলে এক্সকাভেটর দিয়ে ঠিক করে দিবে। মাটি কেটে নেওয়ায় জমিতে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে এ বছর আর জমিতে ফসল করতে পারবেন না তারা।
রশিদপুর গ্রামের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কৃষক বলে, ‘জোর করে ভূমিদস্যুরা আমার জমির মাটি কেটে নিচ্ছে। মাটি কাটতে বাধা দিয়েও কোনো লাভ হচ্ছে না। আমরা সাধারণ মানুষ তাদের সঙ্গে পেরে উঠব না। বাধা দিতে গেলে নানা ধরনের হুমকি ও হয়রানির শিকার হতে হয়।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো: রুহুল আমিন শরীফ বলেন, ‘আমাদের নিয়মিত অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ফসলি জমি রক্ষার্থে আমরা কাউকে ছাড় দিবো না। যারা মাটি কাটার সঙ্গে জড়িত অতিদ্রুত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’