টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলা যুবদলের সাবেক সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম রফিক দীর্ঘদিন ধরে কালোবাজারি, চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও মাদক সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ সহ নানা অপকর্মের মূল হোতা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন।
৫ আগষ্ট ছাত্র জনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়ে পট পরিবর্তনের সাথে সাথে ফ্যাসিবাদের দোসোরেরা পালিয়ে কিংবা আত্মগোপনে দেশত্যাগ করলেও তাদেরই স্থলাভিষিক্ত হতে দেখা যাচ্ছে নব্য বিভিন্ন দল ও রাজনৈতিক সংগঠনের কিছু নেতাকর্মীদের।
ঐতিহাসিক ছাত্রজনতার আন্দোলনে যেখানে মানুষ অতীতের জুলুম, নির্যাতন ও লুটপাট থেকে ব্যতিক্রমী একটি সমাজব্যবস্হা দেখার স্বপ্নে বিভোর ঠিক সে সময়েই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সুযোগ সন্ধানী কিছু নেতারা পতিত ফ্যাসিবাদের অপকর্মের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রফিকুল ইসলাম রফিক উপজেলা বিএনপি’র সাবেক যুগ্ন আহ্বায়ক ও কালিহাতী পৌরসভার সাবেক মেয়র আলী আকবর জব্বারের ছেলে। তিনি উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা অফিসের সঙ্গে যোগসাজশ করে কালোবাজারি মালামাল ক্রয়-বিক্রয় করেন। তাছাড়াও কালিহাতী ফিলিং স্টেশনের সামনে সিএনবির জমি অবৈধ দখল ও সেখানে ঘর নির্মাণ করে দীর্ঘদিন যাবত এসব দোকান ঘর ভাড়া দিয়ে অর্থ আদায় করছেন রফিক।
যুবদল নেতা রফিকের অপকর্মের সীমা নেই। তিনি দীর্ঘদিন ধরে মাদকাসক্ত এবং ইতিপূর্বে একাধিকবার তার বাবা নিজেই পুলিশের হাতে তাকে সোপর্দ করেছেন। এমনকি বিভিন্ন সময় মাদকাসক্ত পুনর্বাসন কেন্দ্রে ভর্তি করিয়েও কাঙ্খিত কোনো ফল মেলেনি।
বর্তমানে যুবদল নেতা রফিক ১০-১২ জনের একটি সশস্ত্র বাহিনী তৈরি করে প্রশাসনের নাকের ডগায় বিভিন্ন অপকর্ম পরিচালনা করে যাচ্ছেন। তার বাহিনীর সদস্যরা বাধ্যতামূলক ইট, বালি সাপ্লাই, জমি দখল, চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চান না কালিহাতীর সাধারণ মানুষ।
সম্প্রতি তার নেতৃত্বে কালিহাতীর সাধারণ পাঠাগারে ঢুকে ভাঙচুর চালানো হয়। এছাড়াও, আওয়ামী লীগের কিছু সুবিধাভোগীদের নিয়ে উপজেলা প্রেসক্লাব দখলের অভিযোগও উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা ও উপজেলা বিএনপি’র নেতারা জানান, দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে রফিকুল ইসলাম রফিককে অনেক আগেই দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত ৫ আগস্টের পর কালিহাতীতে বেপরোয়া হয়ে ওঠে রফিক। রফিকের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে উপজেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীদের উপর হামলা, হাত-পা গুঁড়িয়ে দেওয়ার হুমকি, নেতাকর্মীদের ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠানে লোক পাঠিয়ে ভয়-ভীতি প্রদর্শন, চাঁদাবাজি ও দখলবাজি সহ নানা অপকর্মের অভিযোগ উঠেছে। তবে বহিষ্কৃত নেতৃবৃন্দের কোন অপকর্মের দায়-দায়িত্ব দল নিবেনা।
কালিহাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবুল কালাম ভূঞা বলেন, যুবদলের কারো নামে কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগে পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া কালিহাতী প্রেসক্লাব সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে দু’পক্ষের সাথেই বসে কথা হয়েছে। তারা সাংবাদিক নেতাদের উপস্থিতিতে নিজেরা সমাধান করবে বলে আমাকে আশ্বস্ত করেছেন।
এবিষয়ে কথা বলতে রফিকুল ইসলাম রফিককে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।